
প্রকাশনীঃ-হুসাইন-আল-মাদানী।
লেখকঃ-আবু ঈসা মুহাম্মদ ইবনে ঈসা আস-সুলামি আদ-দারির আল-বুগি আত-তিরমিজি রহঃ
অনুবাদঃ-হুসাইন-বিন-সোহরাব & শাইখমো ঈশা মিঞা বিন খলিলুর রহমান
তাহক্কিক্কঃ-নাসিরুদ্দীন-আলবানী-(আব্বু-আব্দুর-রহমান)

































---:সহীহ আত তিরমিযী-তাহকিক:-নাসিরুদ্দিন আলবানী,প্রকাশনী-হুসাইন আল মাদানী--:




ডাউনলড পদ্ধতি-












হাদীস গ্রন্থগুলোর মধ্যে জামি’ আত-তিরমিযী অন্যতম। হাদীস গ্রন্হ গুলোর মধ্যে জামি’ পর্যায়ের হাদীস দুটির মধ্যে এটি একটি অন্যটি হলো সহীহ আল বুখারী। প্রখ্যাত ছয়টি হাদীস গ্রন্থগুলোর মধ্যে তৃতীয় স্থানের অধিকারী। এই হাদীস গ্রন্থটি সম্পর্কে ইমাম তিরমিযী বলেন, যার ঘরে এই কিতাবখানি থাকবে, মনে করা যাবে যে, তার ঘরে স্বয়ং নবী (সা) অবস্থান করছেন ও নিজে কথা বলছেন।
- বইটি কয়েকটি প্রকাশনী হতে বাংলা ভাষায় অনূদিত ও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এর তাহক্বীক সহ প্রকাশ করা হয় নি। হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে। এর তাহক্বীক করেছেন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস শায়খ নাসির উদ্দীন আলবানী। অনুবাদ করেছেন হুসাইন বিন সোহরাব ও শাইখ মো: ঈসা মিঞা বিন খলিলুর রহমান।

- এটিতে জামি আত-তিরমিযী’র শুধুমাত্র সহীহ হাদীসগুলো সংকলিত হয়েছে। তাহক্বীক শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ) থেকে নেয়া হয়েছে।
- হাদীস সম্পর্কিত ইমাম তিরমিযী’র মতামতও সংরক্ষিত রয়েছে।
- একই হাদীস অন্য গ্রন্থে থাকলে তাও উল্লেখ করা হয়েছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে নম্বরও দেয়া হয়েছে।
- শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী কোন গ্রন্থ হতে তাহক্বীক নেয়া হয়েছে তাওউল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সিলসিলাহ সহীহাহ, ইরওয়াউল গালীল, আল কালিমুত তায়্যিব, সহীহুল জামে, রাওযুন নাযীর, তালীকুল রাগীব প্রভৃতি।
- হাদীস উল্লেখিত কুরআনের আয়াতগুলোর ক্ষেত্রে কুরআনের সূরা ও আয়াত নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।
- একই হাদীসের কোন অংশ সহীহ ও কোন অংশ যইফ তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
- উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুহাম্মাদ ইবনে ঈসা আত-তিরমিজি | |
---|---|
জন্ম | ২০৯/২১০ হিজরি (৮২৪/৮২৫ খ্রিষ্টাব্দ) তিরমিজ, বর্তমান উজবেকিস্তানে অবস্থিত |
মৃত্যু | ১৩ রজব ২৭৯ হিজরি (৮ অক্টোবর ৮৯২ খ্রিষ্টাব্দ) বুগ, তিরমিজের নিকটে অবস্থিত, উজবেকিস্তান |
শাখা | হানবালি |
মূল আগ্রহ | হাদিস |
উল্লেখযোগ্য ধারণা | হাদিস সংকলন |
লক্ষণীয় কাজ | সুনান আল-তিরমিজী শামাইল মুহাম্মাদিয়াহ |
![]() |

নাম ও বংশলতিকা
আত-তিরমিজির নাম ছিল "মুহাম্মদ"। আবু ঈসা ("ঈসার বাবা") ছিল তার কুনিয়াত। তার বংশলতিকা নিশ্চিতভাবে জানা যায় না; তার নসব নিম্নোক্তরূপে পাওয়া যায়:
মুহাম্মদ ইবনে ঈসা ইবনে সাওরাহ (محمد بن عيسى بن سورة)[৪]
মুহাম্মদ ইবনে ঈসা ইবনে সাওরাহ ইবনে মুসা ইবনে আদ-দাহহাক (محمد بن عيسى بن سورة بن موسى بن الضحاك)[৫][৬][৭][৮]
মুহাম্মদ ইবনে ঈসা ইবনে সাওরাহ ইবনে শাদ্দাদ (محمد بن عيسى بن سورة بن شداد)[৯]
মুহাম্মদ ইবনে ঈসা ইবনে সাওরাহ ইবনে শাদ্দাদ ইবনে আদ-দাহহাক (محمد بن عيسى بن سورة بن شداد بن الضحاك)[১০]
মুহাম্মদ ইবনে ঈসা ইবনে সাওরাহ ইবনে শাদ্দাদ ইবনে ঈসা (محمد بن عيسى بن سورة بن شداد بن عيسى)[৮]
মুহাম্মদ ইবনে ঈসা ইবনে ইয়াজিদ ইবনে সাওরাহ ইবনে আস-সাকান (محمد بن عيسى بن يزيد بن سورة بن السكن)[৫][৬][৮]
মুহাম্মদ ইবনে ঈসা ইবনে সাহল (محمد بن عيسى بن سهل)[১১][১২]
মুহাম্মদ ইবনে ঈসা ইবনে সাহল ইবনে সাওরাহ (محمد بن عيسى بن سهل بن سورة)[১৩]
তিনি তার লকব "আদ-দাহহাক" ("অন্ধ") বলেও পরিচিত ছিলেন। বলা হয় যে তিনি জন্মের সময় অন্ধ ছিলেন। তবে অধিকাংশ পন্ডিত এ বিষয়ে একমত যে তিনি তার জীবনের শেষের দিকে অন্ধ হয়ে যান।[৫][১৪]
আত-তিরমিজির পরিবার আরব গোত্র বনু সুলাইমের অন্তর্ভুক্ত ছিল। একারণে নিসবাত হিসেবে "আস-সুলামি" এসেছে।[১৫] তার দাদা মার্ভের লোক ছিলেন এবং তিরমিজে বসতি স্থাপন করেন।[৫]
জন্ম
মুহাম্মদ ইবনে ঈসা আত-তিরমিজি আব্বাসীয় খলিফা আল-মামুনের শাসনামলে জন্মগ্রহণ করেছেন। তার জন্মসাল হিসেবে ২০৯ হিজরি (৮২৪/৮২৫ খ্রিষ্টাব্দ) উল্লেখ পাওয়া যায়।[১৫][১৬][১৭] তবে আয-যাহাবি বলেছেন যে আত-তিরমিজি ২১০ হিজরির (৮২৫/৮২৬ খ্রিষ্টাব্দ) কাছাকাছি সময়ে জন্মগ্রহণ করেছেন।[৫] তাই কিছু সূত্রে তার জন্মসাল ২১০ হিজরি উল্লেখিত হয়েছে।[৪][১৮] কিছু সূত্র মোতাবেক তিনি মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছেন।[১৯] তবে অন্যদের মতে তার জন্মস্থান তিরমিজ। এটি বর্তমানে উজবেকিস্তানের দক্ষিণে অবস্থিত।[১৫] এ বিষয়ে তিরমিজ বিষয়ক মতটি সবচেয়ে শক্ত।[৫] বিশেষত তিনি তিরমিজের একটি উপশহর বুগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, একারণে তার নিসবাত হিসেবে "আত-তিরমিজি" ও "আল-বুগি" এসেছে।[১৬][১৮][২০][২১]

আত-তিরমিজি ২০ বছর বয়সে হাদিস অধ্যয়ন শুরু করেন। ২৩৫ হিজরি (৮৪৯/৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ) থেকে শুরু করে হাদিস সংগ্রহের জন্য তিনি খোরাসান, ইরাক ও হেজাজ সফর করেছেন।[৪][৯][১০] তার শিক্ষক ও যাদের কাছ থেকে তিনি হাদিস বর্ণনা করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন:
ইমাম বুখারী[৪][৬][৭][৯][১০][১৪][১৫][১৯]
আবু রাজা উতাইবা ইবনে সাইদ আল-বালখি আল-বাগলানি[৬][৭][১০][১৫]
আলি ইবনে হুজর ইবনে ইয়াস আস-সাদি আল-মারওয়াজি[৬][৭][১০][১৫]
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার আল-বসরি[৭][১০][১৫]
আবদুল্লাহ ইবনে মুয়াবিয়া আল-জুমাহি আল-বসরি[৬]
আবু মুসাব আজ-জুহরি আল-মাদানি[৬]
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল মালিক ইবনে আবি আশ-শাওয়ারিব আল-উমাউয়ি আল-বসরি[৬]
ইসমাইল ইবনে মুসা আল-ফাজারি আল-কুফি[৬]
মুহাম্মদ ইবনে আবি মাশার আস-সিন্দি আল-মাদানি[৬]
আবু কুরাইব মুহাম্মদ ইবনে আল-আলা আল-কুফি[৬][১০]
হানাদ ইবনে আল-সারি আল-কুফি[৬][১০]
ইবরাহিম ইবনে আবদুল্লাহ আল-হারাউয়ি[৬]
সুওয়াইদ ইবনে নাসের ইবনে সুয়াইদ আল-মারওয়াজি[৬]
মুহাম্মদ ইবনে মুসা আল-বসরি[১০]
জায়েদ ইবনে আখজাম আল-বসরি[১৪]
আল-আব্বাস আল-আনবারি আল-বসরি[১৪]
মুহাম্মদ ইবনে আল-মুসান্না আল-বসরি[১৪]
মুহাম্মদ ইবনে মামার আল-বসরি[১৪]
আদ-দারিমি[১০][১৫]
মুসলিম বিন হাজ্জাজ[১৪][১৫][১৯]
আবু দাউদ[৯][১৪][১৯]

আত-তিরমিজি ইমাম বুখারীর ছাত্র ছিলেন। বুখারীও খোরাসানের বাসিন্দা ছিলেন। আয-যাহাবি লিখেছেন, "তার হাদিসের জ্ঞান আল-বুখারীর কাছ থেকে এসেছে।"[১৫] আত-তিরমিজি তার জামি গ্রন্থে ইমাম বুখারীর নাম মোট ১১৪ বার উল্লেখ করেছেন। হাদিসের বর্ণনায় বিবরণ বা বর্ণনাকারীদের তারতম্যের উল্লেখের সময় তিনি ইমাম বুখারীর কিতাব আত-তারিখকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তিনি ইমাম বুখারীকে ইরাক বা খোরাসানে হাদিসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি বলে প্রশংসা করেছেন। তার কাছে ইমাম আবু হানিফার ফতোয়া উল্লেখের জন্য নির্ভরযোগ্য সূত্র ছিল না বিধায় ফকিহদের অভিমত বর্ণনার সময় তিনি আবু হানিফার নাম উল্লেখ করেননি। এর পরিবর্তে তিনি "কুফার কিছু ব্যক্তি" বলে উল্লেখ করতেন।[১৪] ইমাম বুখারীও আত-তিরমিজিকে উচ্চ মর্যাদা দিতেন। বলা হয় যে তিনি আত-তিরমিজিকে বলেছিলেন, "আপনি আমার কাছ থেকে যতটা না উপকৃত হয়েছেন তার চেয়ে আমি আপনার কাছ থেকে বেশি উপকৃত হয়েছি"। তার প্রণীত সহিহ বুখারীতে তিনি আত-তিরমিজির বর্ণিত দুইটি হাদিস লিপিবদ্ধ করেছেন।[১৪][১৫]

এ. জে. উয়েনসিঙ্ক বলেছেন যে আহমাদ ইবনে হানবাল আত-তিরমিজির শিক্ষক ছিলেন।[৯][১৪] তবে হুসেনের মত আত-তিরমিজি কখনো বাগদাদ যাননি এবং তিনি আহমাদ ইবনে হানবালের কোনো বক্তৃতায় অংশ নেননি। তাছাড়া আত-তিরমিজি তার জামি গ্রন্থে সরাসরি কখনো আহমাদ ইবনে হানবালের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেননি।[১৪]
আত-তিরমিজির কিছু শিক্ষক ইমাম বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ ও আন-নাসাইয়েরও শিক্ষক ছিলেন।
বই
আল-জামি আল মুখতাসার মিন আস-সুনান আন-রাসুলিল্লাহ, এটি জামি আত-তিরমিজি নামে পরিচিত
আল-ইলাল আস-সুগরা
আজ-জুহদ
আল-ইলাল আল-কুবরা
আশ-শামাইল আন-নাবাউয়িয়াহ ওয়া আল-ফাদাইল আল-মুসতাফাউয়িয়াহ
আল-আসমা ওয়া আল-কুনা
কিতাব আত-তারিখ

ইমাম তিরমিজি ইমাম বুখারীর খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিরমিজি শাফি বা হানবালি মাজহাবের অনুসারী ছিলেন। এমন হতে পারে যে তিনি নিজে একজন মুজতাহিদ ছিলেন অথবা ইমাম বুখারীর খুব ঘনিষ্ঠ হওয়ায় কিছু অভিমত অনুযায়ী তিনি তার মাজহাব অনুসরণ করতেন।
মৃত্যু
আয-যাহাবির মতানুযায়ী আত-তিরমিজি তার জীবনের শেষ দুই বছর অন্ধ অবস্থায় কাটান।[১০] বলা হয় যে আল্লাহর ভয় বা ইমাম বুখারীর মৃত্যুর কারণে অতিরিক্ত কান্নার জন্য তিনি দৃষ্টিহীন হয়েছিলেন।[৪][৫][১০][১৪][১৫]
ইমাম তিরমিজি ২৭৯ হিজরির ১৩ রজব সোমবার রাতে (৮ অক্টোবর ৮৯২ খ্রিষ্টাব্দ, রোবরার রাত) বুগে ইন্তেকাল করেন।[note ১][৭][১০][১৪] তাকে বর্তমান উজবেকিস্তানের তিরমিজ থেকে ৬০ কিমি উত্তরে শিরাবাদে দাফন করা হয়। তিরমিজে তিনি স্থানীয়ভাবে আবু ঈসা আত-তিরমিজি বা "তিরমিজ উতা" (তিরমিজের পিতা) নামে পরিচিত।[২১]

Post a Comment